দীর্ঘদিন প্রবাসে বাস করে, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য চর্চার কারণে ডায়াস্পোরা সাহিত্য একটু একটু বুঝি। মোজাফফর যখন ডায়াস্পোরা নিয়ে নানান পত্রিকায় লেখা শুরু করলো তখন থেকেই কৌতুহল বশত তার এই লেখাগুলোয় উঁকি ঝুঁকি চলত। এখানেই বলে রাখি মোজাফফর আমার দৃষ্টি কেড়েছে সেই তার ‘মসজিদ‘ ছোটগল্পটি থেকে। তার যেকোন বিষয়ে লেখা সরল গদ্য আমাকে টানে। ‘আমি কত পণ্ডিত‘ এই প্রবনতা তার লেখায় আমি কখনো পাইনি, হয়ত এটাই ভালোলাগার কারণ।‘ দক্ষিণ এশিয়ার ডায়াসপোরা সাহিত্য‘ বইটি প্রকাশিত হয়েছে সবেমাত্র। আমার কাছেও বইটি কাকতালীয়ভাবে দ্রুত পৌঁছে যায়। বিষয় বস্তু অনুযায়ী বইটির কলেবর ১৭৭ পাতা একটু হতাশ করেছে। অনেক বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানার আগ্রহ রয়ে গেল। পরবর্তী সংস্করণে সে আশাপূরণের অনুরোধ জানিয়ে রাখলাম। বইটির শিরোনামে যেহেতু দক্ষিণ এশিয়া শব্দটি রয়েছে তাই বিশেষ করে দক্ষিন এশিয়ার অন্যান্য দেশের অংশটি আরোও বিস্তারিত আশা করেছিলাম। ডায়াস্পোরা আমার কাছে নতুন কোন বিষয় নয় তাই আগ্রহের সবটুকু গিয়ে পড়লো বাংলাদেশ পর্বে। বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ ডায়াসপােরা সাহিত্য নিয়ে এর আগে এমন লেখা চোখে পড়েনি। বিশেষ করে বাংলাদেশে বিহারি ডায়াসপােরা, বাংলাদেশে রােহিঙ্গা ডায়াসপােরা ও দেশভাগােত্তর ডায়াসপােরা সাহিত্য অংশটি। বিহারি ও রােহিঙ্গাদের পর্যালোচনা এবং প্রশ্নগুলো বেশ কৌতুহলোদ্দীপক। সিনেমা দেখে আনন্দের বহির্প্রকাশ যেমন তেমনি মোজাফফরের এই চ্যাপ্টার গুলো পড়ে হাততালি দিয়েছি। নির্জন রাতে পড়তে পড়তে একসাইটেড হয়ে গেছি। লাবনীকে (আমার স্ত্রী) বলতে শুনেছি "পেয়েছে এতদিন পরে একটি বই"। বইটি এক বৈঠকে পড়া তাই কিছু বিষয় একটু খটকা রয়েছে (আমার অজ্ঞতা)। পুনঃপাঠে হয়ত বিষয়গুলো পরিস্কার হয়ে যাবে। সম্পূর্ণ বইটি বাংলাদেশের পাঠকদের চিন্তায় দোলাদেবে বলে আমার বিশ্বাস।
পাঞ্জেরী পাবলিশার্স
২০১৯
৩২৫ টাকা
Share /
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments
Post a Comment